থানকুনির উপকারিতা:

থানকুনি পাতার গুঁড়া ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকরী।
ত্বকের ভেতরের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে।
ত্বকের বলিরেখা কমায়।
উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
নতুন চুলের বৃদ্ধি/বৃদ্ধি প্রচার করে।
খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
1. চুল পড়ার হার কমায়:
বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে সপ্তাহে ২-৩ বার থানকুনি পাতা খেলে মাথার ত্বকে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে চুল পড়ার মাত্রা কমতে শুরু করে। চুল পড়ার হার কমাতে থানকুনি পাতাও ব্যবহার করতে পারেন। কিভাবে? পরিমাণ মতো থানকুনি পাতা নিয়ে গুঁড়ো করে নিন। তারপর এর সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে তুলসী পাতা ও আমলা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। সবশেষে পেস্টটি চুলে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। 10 মিনিট পর চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে অন্তত ২ বার এভাবে চুলের যত্ন নিলে দেখবেন মজবুত চুল!

2. শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ নির্মূল হয়:
সারাদিন ধরে বিভিন্ন ক্ষতিকর টক্সিন আমাদের শরীরে ও রক্তে প্রবেশ করে। এই বিষগুলো সময়মতো শরীর থেকে বের করা না গেলে তা খুবই বিপজ্জনক! আর এই কাজটি করে থানকুনি পাতা। কিভাবে করবেন এই ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে অল্প পরিমাণ থানকুনি পাতার রসের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকারক পদার্থ দূর হয়ে যায়। ফলে বেশ কিছু রোগ দূরে থাকতে বাধ্য হয়।

3. ক্ষত নিরাময় করে:
থানকুনি পাতায় উপস্থিত স্পাইওনিন ও অন্যান্য উপকারী উপাদান এতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই এখন থেকে কোথাও কাটলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে একটু থানকুনি পাতা পেঁচিয়ে নিন। দেখবেন সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা কমে যাবে।

4. হজমের উন্নতি ঘটায়:
থানকুনি পাতাও হজমশক্তি বাড়াবে। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে থানকুনি পাতায় উপস্থিত বেশ কিছু উপকারী উপাদান অ্যাসিড নিঃসরণের যত্ন নিয়ে হজমে সাহায্য করে। ফলে বদহজম ও গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা উঠতে পারে না।

5. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে:
থানকুনি পাতায় উপস্থিত অ্যামাইনো অ্যাসিড, বিটা ক্যারোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইটোকেমিক্যালস ত্বকের ভেতরের পুষ্টির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি বলিরেখা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এর পাশাপাশি অল্প বয়সে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।

6. আমাশয়ের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়:
এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়মিত থানকুনি পাতা খেতে হবে। টানা ৭ দিন এভাবে করতে পারলেই হলো! এই ধরনের সমস্যা কমাতে থানকুনি পাতাও ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে এক পরিমান থানকুনি পাতা পিষে নিন। তারপর সেই রসের সাথে সামান্য চিনি মেশান। দুই চামচ এই মিশ্রণ দিনে দুবার খেলে দেখবেন ব্যথা কমে যাবে।

7. পেটের রোগের চিকিৎসায় উপকারী:
অল্প পরিমাণ আম গাছের ছাল, ১টি আনারস পাতা, হলুদের রস এবং পরিমাণ মতো থানকুনি পাতা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি নিয়মিত সেবনে কিছু দিনের মধ্যেই যে কোনো ধরনের পেটের অসুখ সেরে যায়। সেই সঙ্গে রসালো হওয়ার প্রবণতাও কমেছে।

8. কাশির প্রকোপ কমায়:
২ চামচ থানকুনি পাতার রসে সামান্য চিনি মিশিয়ে খেলে কাশি কমে যায়। আর এক সপ্তাহ খেতে পারলে তো প্রশ্নই আসে না। সেক্ষেত্রে কাশির কোনো লক্ষণ থাকবে না।

9. জ্বরের প্রকোপ কমে যাওয়া:
ঋতু পরিবর্তনের সময় যাঁরা প্রায়ই জ্বরের ধাক্কায় কাবু হন, তাঁরা অবশ্যই থানকুনি পাতা খান! কারণ আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে উল্লেখ আছে জ্বরের সময় ১ চা চামচ থানকুনি ও ১ চা চামচ শিউলি পাতার রস মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে অল্প সময়েই জ্বর সেরে যায়। সেই সঙ্গে শারীরিক দুর্বলতাও কমে।

10. গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়:
অসময়ে খাওয়ার কারণে গ্যাস্ট্রিক জালে আটকা পড়েন? সমস্যা নেই! বাজার থেকে থানকুনি পাতা কিনুন। তবেই দেখবেন সমস্যা হাতের নাগালে চলে আসবে। আসলে, একটি ঘরোয়া প্রতিকার এই ক্ষেত্রে কাজে আসে। চিকিৎসা কি? আধা লিটার দুধে 250 গ্রাম মিসরি এবং অল্প পরিমাণ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। তারপর সেই মিশ্রণটি অল্প অল্প করে নিয়ে প্রতিদিন সকালে খেতে শুরু করুন। এক সপ্তাহ এভাবে করলে উপকার পাবেন।